ইট চুরির ঘটনায় মামলা, ইউপি সদস্য কারাগারে, লাপাত্তা বিএনপি নেতা
নিজস্ব প্রতিবেদক
-
প্রকাশিত : ০৪ জানুয়ারী, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
বেতাগীতে ইট চুরির ঘটনায় মামলা, ইউপি সদস্য কারাগারে, লাপাত্তা বিএনপি নেতা।
মোঃ শাহজালাল, বরগুনা : বেতাগীতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) রাস্তার কয়েক হাজার ইট চুরির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও এক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে।
চুরির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য মাসুদ আলম মৃধাসহ তিনজনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন পুলিশ। তবে ঘটনার পর এলাকা থেকে লাপাত্তা উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ও সাবেক ইউপি সদস্য মো. সিদ্দিকুর রহমান।
স্থানীয়রা বলেন, উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের ইউপি কার্যালয় এলাকায় রাস্তার পুরাতন ইট চুরি করে বিক্রির সময় এলাকাবাসী দুইজনকে হাতেনাতে আটক করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকা থেকে সটকে পড়েন বিএনপি নেতা সিদ্দিক। এ ঘটনায় হোসনাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শৈলেন চন্দ্র রায় বাদী হয়ে চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
ঘটনার সাথে স¤পৃক্ত থাকায় সংশ্লিষ্ট ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মাসুদ আলম, জালাল খলিফা ও রিয়াজ সরদারকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে মঙ্গলবার কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, ইউপি কার্যালয়ের সামনের সড়কে মাটির কাজ চলছে- এ সুযোগে রাতের আঁধারে বিএনপি নেতা সিদ্দিক ও স্থানীয় একটি চক্র মিলে রাস্তায় বিছানো হাজার হাজার ইট উত্তোলন করে বিক্রি করেন। এছাড়াও একই সড়কের বন বিভাগের রোপিত ২৩টি তালগাছ ও বেশ কয়েকটি আকাশমনি গাছ কেটে নিজের মতো করে আত্মসাৎ করেছেন বিএনপি নেতা সিদ্দিক।
স্থানীয়রা বলেন, হোসনাবাদ ইউনিয়নের সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য মুক্তা বেগমের স্বামী ওই বিএনপি নেতা সিদ্দিক। দলীয় ক্ষমতাকে ব্যবহার করে স্ত্রীকে প্যানেল চেয়ারম্যান বানিয়ে অপকর্মের রাজত্ব তৈরি করেছেন তিনি। বিভিন্ন ধরনের ভাতার নামে অর্থ আদায়, সরকারি খাসজমি দখল করে কাঠ চেরাইয়ের মিল ও বসত বাড়ি নির্মাণসহ নানা অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। বিগত দিনে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে দল থেকে বহিষ্কারও হন সিদ্দিক।
ইট চুরির বিষয়ে সিদ্দিকুর রহমান বলেন, হোসনাবাদ ইউনিয়ন কার্যালয়ের সামনের সড়কে পাউবোর (সড়ক উন্নয়নে মাটির টেকসই বেড়িবাঁধ) নির্মাণ কাজ চলছে। ঐ রাস্তার পুরাতন ইটগুলো মাটির নিচে চাপা পড়ছিল। স্থানীয় ইউপি সদস্য বিষয়টি আলাপ করায় ইটগুলো উঠিয়ে রাখি।
ইট বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইট উঠানোর লেবার খরচের বদলে তাদের তিন-চার হাজার ইট দেওয়া হয়েছে। চুরি করে বিক্রি করিনি। তবে উপজেলার বিএনপির একটি গ্রæপ কোণঠাসা করতে ষড়যন্ত্রমূলক মামলাটি করিছে।
বেতাগী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মনিরুজ্জামান মনির বলেন, চুরি করে বিক্রি করা ইটের কিছু পরিমাণ পুলিশ উদ্ধার করেছে এবং স্থানীয় এক ব্যক্তির জিম্মায় রাখা হয়েছে। চুরির ঘটনায় চারজনকে আসামি করে মামলা রুজু করা হয়েছে। ইতোমধ্যে তিনজনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামি সিদ্দিককে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বশির গাজী বলেন, সরকারি রাস্তার ইট চুরির ঘটনায় সব ধরনের আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য চুরির ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকায় ফৌজদারি অপরাধ ইউনিয়ন পরিষদ আইন ২০০৯ এর বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর চিঠি প্রেরণ করা হবে।
মোঃ শাহজালাল
বরগুনা।
আপনার মতামত লিখুন :